Note: This page is bilingual
About Late Kalyan Kr. Biswas (Pulak Da) at Siliguri Ashrampara Agragamee Sangha
‘ভুল শিক্ষা অজ্ঞতার চেয়ে বেশি ক্ষতিকর’ এই আপ্তবাক্য তাগিদ জুগিয়েছিল প্রশিক্ষিত কোচের সাহায্য নেওয়ার।
কলকাতা ময়দানের কোচদের নিয়মিত নিয়ে আসা ব্যয়বহুল। ক্লাবের পক্ষে সেই ব্যয় বহন করা কষ্টসাধ্য হলেও ক্রিকেটের উন্নয়নে কর্তৃপক্ষ সেই দায়িত্ব নিতে রাজি হলো। শুরু হলো শিলিগুড়ির ক্রিকেটের নতুন অধ্যায়। আবেদন করা হলো নিজের গুরু কলকাতা মাঠের সর্ব্বজন শ্রদ্ধেয় কোচ কার্তিক বোসের সুযোগ্য উত্তরসূরী কল্যাণ বিশ্বাসকে। ময়দানে ‘পুলকদা’ নামে অধিক পরিচিত গুরু সাড়া দিলেন শিষ্যের আবেদনে। রাজি হলেন শিলিগুড়ির মতো ছোট শহরের একটি ক্লাবে কোচিংয়ের দায়িত্ব নিতে। জুন1989 এ প্রথম পা রাখলেন টেবিল টেনিসের শহর বলে খ্যাত শিলিগুড়িতে ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে।
ক্রিকেট পাগল এই মানুষটি সম্পর্কে কিছু কথা না বললে শিলিগুড়ির ক্রিকেটের অগ্রগতির ইতিহাস হবে বিবর্ণ।
এক ঝাঁক ছোট ছোট ছেলেদের সামনে পেয়ে খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল তাঁর মুখ। দীর্ঘ দিনের কোচিংয়ের অভিজ্ঞতায় প্রভুত সম্ভাবনার উৎসের সন্ধান পেয়েছিলেন সেদিনের সারিবদ্ধ ছাত্রদের মধ্যে। জহুরী জহর চিনতে ভুল করে নি। ক্লাবের পরিবেশ এবং পরিকাঠামো তাঁকে এতটাই খুশি করেছিল যে, তিনি বলতেন, ‘এখানকার ক্রিকেটের পরিবেশ দেখে কার্তিকদার বাড়ির ক্রিকেট প্রশিক্ষণের পরিবেশের কথা মনে পড়ছে।’ তিনি বলতেন এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা যা শিখেছে ব্যাকরণগত ভাবে তা যথেষ্ট ভালো।
তারপর থেকে যতদিন শারীরিকভাবে সচল ছিলেন নিয়মিত নিজের খরচে শিলিগুড়ি এসেছেন ছেলেদের হাতেকলমে ক্রিকেটের প্রশিক্ষণ দিতে। শিলিগুড়ি ক্রিকেট যেন প্রকৃত অর্থে যৌবনে পদার্পন করলো। শিলিগুড়ি পেল পলাশ ভৌমিক, সন্দীপ স্যানাল, সুমন্ত চ্যাটার্জী, রৈনাক সরকার, চঞ্চল সরকার, বিক্রমজিৎ ভৌমিক, কৌশিক গুহ, কামাল হাসান মন্ডল, অভিষেক চৌধুরী, দেবব্রত দাস, পার্থ সারথি ভট্টাচার্য্য, ঋদ্ধিমান সাহার মতো এক ঝাঁক ক্রিকেটার। ক্রিকেটের প্রতি অসীম ভালোবাসায় অসুস্থ শরীরেও নিয়মিত আসতেন তাঁর প্রিয় ছাত্রদের ঘষে মেজে আরো শানিত করে তুলতে। কিন্তু প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে বার্ধক্যজনিত কারনে, গুরু একদিন প্রশিক্ষণের ভার তুলে দিলেন তাঁর প্রিয় শিষ্য জয়ন্তর হাতে। যত্ন নিয়ে শেখালেন কোচিংয়ের কলাকুশল।